ক্যাডেট কলেজ ভর্তি প্রস্তুতি : বাংলাদেশের ১২ টি ক্যাডেট কলেজ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। মানসম্মত শিক্ষার্জনের জন্য প্রতিবছরই দেশের লাখো মেধাবীরা ক্যাডেট কলেজে ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে থাকে। সারাদেশে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় ক্যাডেট কলেজগুলোই সবার পছন্দের তালিকায় প্রথমে থাকে।
ক্যাডেট কলেজে ভর্তি পরীক্ষার খুঁটিনাটি
কারণ, চমৎকার শিক্ষা পদ্ধতি, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রম, বাধ্যতামূলক শারীরিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখছে এসব প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি এখানকার শিক্ষার্থীদের কোন অতিরিক্ত কোচিং করতে হয় না কিংবা প্রাইভেট পড়তে হয় না।
গত বছর ক্যাডেট কলেজ ভর্তিযুদ্ধে ৬ শত আসনের বিপরীতে ২৫ হাজার শিক্ষার্থী লড়াই করে। যা তার পূর্বের বছরের চেয়ে বেশি। প্রতিটি আসনের বিপরীতে প্রায় ৪২ জন অংশ নেয়। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে তুমুল জনপ্রিয় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগিতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। আর তাই ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হয়ে পড়ালেখার সুযোগ পেতে হলে ভালো ও পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির বিকল্প নেই।
ক্যাডেট কলেজে ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টন
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় মূলত ৭ টি বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করা হয়। এগুলো যথাক্রমে বাংলা, ইংরেজী, গণিত, বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং সাধারণ জ্ঞান। বাংলার জন্য ৬০ নম্বর বরাদ্দ। ইংরেজী ও গণিতের জন্য ১০০ করে মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং সাধারণ জ্ঞান মিলিয়ে মোট ৪০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। সুতরাং সবগুলো বিষয় মিলিয়ে সর্বমোট ৩০০ মার্কের একটি পরীক্ষা হতে চলেছে।
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি প্রস্তুতি ২০২২ বাংলা
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি প্রস্তুতি বাংলা ৬০ নম্বর : বাংলায় গদ্য ও পদ্য প্রস্তুতি নেয়ার জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ২০২০ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা বই পড়তে হবে। ব্যকরণের জন্যও নিতে হবে বিস্তর প্রস্তুতি। এক্ষেত্রে মূল পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি নবম দশম শ্রেণীর ব্যাকারন বই সহ অন্যান্য ব্যকরণ বইগুলো পড়া যেতে পারে।
ব্যকরণে যা পড়বে –
১. ভাষা ও বাংলা ভাষা, ধ্বনিতত্ব, রূপতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব, বাগর্থ। ২. শব্দ ও পদ পরিচয়: শব্দ, পদ, পদের শ্রেণিবিভাগ, পদ পরিবর্তন, বিপরীত শব্দ, দ্বিরুক্ত শব্দ ও সংখ্যাবাচক শব্দ। ৩. লিঙ্গ। ৪. বচন। ৫. ক্রিয়ার কাল: শ্রেণিবিভাগ ও প্রয়োগ। ৬. কারক। ৭. বাগধারা। ৮. এক কথায় প্রকাশ। ৯. বিরাম চিহ্ন।
নির্মিতি ও রচনারীতি:
১। ভাব-সম্প্রসারণ।
২। অনুচ্ছেদ লিখন/যুক্তিভিত্তিক অনুচ্ছেদ (১০-১৫ বাক্য)
৩। অনুধাবন।
৪। সারাংশ ও সারমর্ম।
আরও পড়ুনঃ ক্যাডেট কলেজ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি 2022
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি প্রস্তুতি ২০২২ ইংরেজি
ইংরেজী প্রস্তুতি: ১০০ নম্বর : English For Today For class-VI। গ্রামার সেকশনের জন্য নিচে উল্লেখিত বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে।
Grammar –
- Sentence.
- Parts of Speech.
- Gender.
- Number.
- Punctuation and use of capital letters.
- Tense.
- Subject and Predicate .
- Agreement of Subject and Verb.
- Transformation of sentences.
- Correct form of verbs
- Contractions.
- Re-arrange jumbled words to make sentences .
- Spelling.
- Phrases and Idioms.
Writing Section:
- Paragraph writing.
- Story writing from given outline.
- Comprehension.
- Argumentative Essay.
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি প্রস্তুতি ২০২২ গণিত
গণিত প্রস্তুতি ১০০ নম্বর
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত শিক্ষাবর্ষের ৬ষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্য পুস্তক পড়তে হবে।এছাড়া ৮৬ ও ১৪ সালের বোর্ড বই। গণিতে প্রস্তুতির বিষয়গুলো হচ্ছে:
১। স্বাভাবিক সংখ্যা ও ভগ্নাংশ।
২। অনুপাত ও শতকরা।
৩। পুর্ণসংখ্যা।
৪। বীজগণিতীয় রাশি।
৫। সরল সমীকরণ।
৬। জ্যামিতির মৌলিক ধারণা।
৭। ব্যবহারিক জ্যামিতি।
৮। তথ্য ও উপাত্ত।
৯। বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক অংক
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি প্রস্তুতি ২০২২ সাধারণ জ্ঞান
সাধারণ জ্ঞান প্রস্তুতি: ৪০ নম্বর
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত শিক্ষাবর্ষের ৬ষ্ঠ শ্রেণির নিচে উল্লেখিত পাঠ্য পুস্তক পড়তে হবে।
১। সাধারণ বিজ্ঞান
২। বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
৩। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
বিশেষ দ্রষ্টব্য: সাধারণ জ্ঞানের জন্য বাংলাদেশ বিষয়াবলী ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর জন্য যেকোনো প্রকাশনীর গাইড পড়তে পারেন । কম পড়ে সর্বোচ্চ কমন পেতে আমার তৈরি সাজেশন পড়তে পারেন।
প্রতি বছর দেশের ১২টি কলেজে ৬০০ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়ে থাকে। ভর্তির ক্ষেত্রে মেধাই মূল বিবেচ্য বিষয়। কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হলেও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে কেউ কোটা সুবিধা পায় না। প্রতিটি বিষয়ে ভালো প্রস্তুতি নিয়ে তুমিও হতে পারো দেশসেরা ক্যাডেটদের মধ্যে অন্যতম একজন। আর এজন্য অবশ্যই ভালো প্রস্তুতির বিকল্প নেই।
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি বাছাই প্রক্রিয়া
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি বাছাই প্রক্রিয়া : প্রথমে লিখিত পরীক্ষারা মাধ্যমে মেধা তালিকা দেখে মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রার্থী বাছাই করা হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষে নির্বাচিত ক্যাডেটদের আইএসএসবিতে নিয়ে যাওয়া হয় মানসিক ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। এরপর তারা ক্যাডেট কলেজগুলোয় ভর্তির সুযোগ পায়। যেহেতু ক্যাডেট কলেজে ভর্তির হওয়ার জন্য প্রতিবছর প্রচুর প্রতিযোগিতা হয়, তাই ভর্তির ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীর মেধাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। যদিও কোটা পদ্ধতি অনুরণ করা হয়, কিন্তু লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে কেউ কোটা সুবিধা পায় না।
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি খরচ
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি খরচ : অভিভাবকদের আয়ের ওপর ভিত্তি করে ক্যাডেট শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি ও থাকা-খাওয়ার খরচ নির্ধারণ করা হয়। সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বনিন্ম ১৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা এবং বেসরকারি চাকরিজীবীদের সর্বনিন্ম ১৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক ফি দিতে হয় ক্যাডেট কলেজে।
কেন পড়বে ক্যাডেট কলেজে?
ক্যাডেট কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থী অত্যন্ত শৃংখলা ও অধ্যবসায়ের মধ্যে ক্লাস কার্যক্রম, ব্যক্তিগত অধ্যয়ন, খেলাধুলা, পিটি ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে বড় হয়। প্রায় প্রতিটি কলেজের ভেতরেই শিক্ষার্থীদের জন্য আছে সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা। সকাল সাড়ে ৬ টা থেকে রাত ১০ টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকে ক্যাডেটরা।
সপ্তাহে ৪ দিন পিটি (শারীরিক ব্যয়াম প্রশিক্ষণ) ও ২ দিন ড্রিল করার মধ্যদিয়ে শুরু হয় দিনের। সকাল সাড়ে ৭ টায় নাস্তা খেয়ে ৮ টার মধ্যে ক্লাসে যেতে হয় প্রতিটি শিক্ষার্থীকে। সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত ক্লাসে আলোচনা চলে কারও কোনো পড়া বুঝতে সমস্যা আছে কিনা। সাড়ে ৮ টা থেকে ক্লাস শুরু হয়ে মিল্ক ব্রেকসহ (দুধসহ হাল্কা নাস্তা) চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। ১ টা ৪০ মিনিটে ডাইনিং হলে দুপুরের খাবার খেতে হয়। সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত নিজের আবাসিক হাউসে ফিরে বিশ্রাম নেয় ছাত্ররা। সাড়ে ৩ টার পর কলেজ মাঠে বাস্কেটবল, ভলিবল, সাঁতার, স্কোয়াশ, ফুটবল যে কোনো একটি খেলা বাধ্যতামূলক।
সন্ধ্যার নাস্তা খেয়ে মুসলমান ক্যাডেটরা মাগরিবের নামাজ পড়তে কলেজের মসজিদে যায়। অন্য ধর্মের ছাত্ররা নিজ নিজ হাউসের প্রার্থনা রুমে প্রার্থনা করে। ক্যাডেট কলেজে সান্ধ্যপ্রার্থনাকে ‘ডিসিপ্লিনের অংশ’ হিসেবে ধরা হয়।
ক্যাডেট কলেজে ভর্তি পরীক্ষার খুঁটিনাটি
এরপর সাড়ে ৬ টায় শুরু প্রতিদিনের ব্যক্তিগত অধ্যয়ন। রাত ৮ টায় আবার ডাইনিং হলে সবাই একসঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে পড়ার টেবিলে ফিরে যায়। চলে রাত ১০ টা পর্যন্ত। ১০ টায় যার যার হাউসে ফিরে যায় সবাই। এই সময়টাতে প্রয়োজনে হল কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ক্যাডেটরা মোবাইল ফোনে বাসায় কথা বলতে পারে। রাত ১০ টা ৪০ মিনিটে একসঙ্গে নিভে যায় সব হাউসের বাতি। তার আগে বন্ধুদের সঙ্গে গল্পগুজব বা পরদিন পরিধানের জন্য জামা-কাপড়-জুতো ঠিকঠাক করার সুযোগ দেয়া হয়।
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যেখানে সকাল থেকে রাত অবধি ক্লাস-কোচিং আর ব্যক্তিগত অধ্যয়নে ব্যস্ত থাকতে হয়, সেখানে কোচিং ছাড়াই মাত্র ৮ ঘণ্টার লেখাপড়ায় ক্যাডেটরা পরীক্ষায় এত ভালো ফল করছে। একটি সাধারণ স্কুল-কলেজে ক্লাসরুমে অনেক ছাত্রছাত্রী থাকে।
কিন্তু ক্যাডেট কলেজের প্রতিটি ক্লাসে সর্বোচ্চ ৩০ জন থাকে। ফলে শিক্ষক সবাইকে নিবিড়ভাবে পড়ানোর সুযোগ পান। কোনো ছাত্রের কোনো কিছু বুঝতে সমস্যা হলে ক্লাসের বাইরেও আলোচনা করতে পারে। ক্লাসের পর যাতে কোনো শিক্ষার্থীকে আর পড়তে না হয় সেটা মাথায় রেখে শিক্ষক এখানে পাঠদান করান। আর বাইরে বেশিরভাগ শিক্ষক পড়ান শিক্ষার্থীকে যাতে তার কাছে কোচিংয়ে যেতে হয় তা মাথায় রেখে।
সাগর স্যার ক্যাডেট কলেজে ভর্তি সাধারণ জ্ঞান ০১৭১৯০৫৬৩৭৯ নোট : সাধারণ জ্ঞান অনলাইন ও অফলাইনে শিক্ষার্থী ভর্তি চলিতেছে। প্রাক্তন সাধারণ জ্ঞান শিক্ষক শাহীন শিক্ষা পরিবার বর্তমান সাধারণ জ্ঞান শিক্ষক ভেনাস ক্যাডেট কোচিং
[…] ক্যাডেট কলেজ ভর্তি প্রস্তুতি ২০২২, ক্যাডেট কলেজে ভর্তি পরীক্ষার খুঁটিনা… অনেক প্রয়োজনীয় বিষয় জানতে পারবে।সকল […]
[…] ক্যাডেট কলেজ ভর্তি প্রস্তুতি,ক্যাডেট… […]
[…] সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় আরও তথ্য জানতে এই লিংকে প্রবেশ করুন […]